কৃষিক্ষেত্রে শৈবালের ভূমিকা
কৃষিক্ষেত্রে শৈবালের ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকে কৃষিজমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য সামুদ্রিক শৈবাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে । জৈব সার হিসেবে বাদামি শৈবাল ও লোহিত শৈবালের প্রচলন আগে থেকে ছিল । স্থলজ শৈবাল মাঠের পানি সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । ভূমিক্ষয় রোধ করে । নতুন মাটি গঠন করে ও সংরক্ষণ করে মাটিকে কৃষিকাজের উপযোগী করে তোলে । ২০ টির অধিক নীলাভ সবুজ শৈবাল বাতাসের নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে । এদের মধ্যে Nostoc, Anabaena, Scytonema , Oscillatoria উল্লেখযোগ্য ।সামুদ্রিক শৈবালের দেহে ফসফরাস , পটাশিয়াম এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সামান্য পরিমাণে উপস্থিতির কারণে সমুদ্র উপকূলবর্তী বিভিন্ন দেশে কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধিকল্পে সামুদ্রিক শৈবাল এবং কখনও কখনও স্বাদু পানির শৈবাল সার বা ফার্টিলাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হয় । সার হিসেবে ব্যবহার্য শৈবালসমূহের তালিকা নিম্নরূপ :
১. যেসব কৃষি জমিতে ক্যালসিয়াম ঘাটতি আছে সেখানে Lithophyllum , Lithothamnion , Chara প্রভৃতি গণের শৈবালের থ্যালাসকে সার হিসেবে ব্যবহার করলে জমির Ca ঘাটতি পূরণ হয় ।
২. আয়ারল্যান্ডের কৃষকেরা Fucus নামক সামুদ্রিক শৈবালকে জমির উর্বরতা বৃদ্ধিকল্পে সার হিসেবে ব্যবহার করে ।
৩. শৈবাল - গবেষক Thivy ১৯৬০ সালে ঢেড়স এর জমিতে সার হিসেবে সামুদ্রিক শৈবাল ব্যবহার করে প্রায় দেড় গুণেরও বেশি ফলন পেয়েছেন ।
৪. ভারতের কর্ণাটে অবস্থিত সেন্ট্রাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট ধানের জমিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী নীলাভ সবুজ শৈবাল Nostoc , Anabaena ইত্যাদি প্রয়োগ করে ধানের উৎপাদন ৩০ % বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে ।
৫. কোনো কোনো উন্নত দেশে কয়েক ধরনের সামুদ্রিক শৈবালে দেহের মিশ্রণ থেকে নিষ্কাশিত ঘন রসকে পানির সাথে মিশি উক্ত দ্রবণ সার হিসেবে ব্যবহার করে ভাল ফল পাওয়া গেছে ।
উপরোক্ত আলোচনা প্রেক্ষিতে বলা যায় যে , কৃষিক্ষে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে শৈবাল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে তাই কৃষিক্ষেত্রে শৈবালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
Comments
Post a Comment