মস এবং ফার্ণ (সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর) Part 2
১৬. রাইজোফোর কাকে বলে ?
Rhizophore দুটি গ্রিক শব্দ নিয়ে গঠিত । Rhiza = মূল এবং Phora = বহনকারী । সুতরাং, পাতাবিহীন সিলিন্ডার আকৃতির মূল বহনকারী কাওকে রাইজোফোর বলা হয় । রাইজোফোরের নিচের দিকে মূল সৃষ্টি হয় ।এটি Selaginella তে দেখা যায় ।
১৭. স্পোরোফাইট ও গ্যামিটোফাইট কাকে বলে ?
উদ্ভিদের জীবনচক্রে দুটি দশা আছে । একটি দশা হলো স্পোরোফাইটিক অন্যটি গ্যামিটোফাইটিক । স্পোরাফাইটিক দশাটি ডিপ্লয়েড অর্থাৎ 2n সংখ্যক ক্রোমোজোম সমৃদ্ধ এবং গ্যামিটোফাইটিক দশাটি হ্যাপ্লয়েড অর্থাৎ n ( অর্ধেক / Half ) সংখ্যক ক্রোমোজোম সমৃদ্ধ । Sporophyte শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় Sporous > Spore = রেণু , Phyton > Phyte=উদ্ভিদ / উদ্ভিদদেহ । সুতরাং , উদ্ভিদের স্পোর বা রেণুবাহী দশাকেই স্পোরোফাইটিক দশা এবং স্পোর বা রেণুবাহী অঙ্গ / দেহকে স্পোরোফাইট বলা হয় । আর আমরা জানি , স্পোরবহনকারী উদ্ভিদদেহ দুটি হ্যাপ্লয়েড গ্যামিটের মিলনের ( n + n ) ফলে উৎপন্ন হয় । এজন্য স্পোরবাহী উদ্ভিদ ডিপ্লয়েড 2n .
স্পোরোফাইট পরিণত হলে স্পোরাঞ্জিয়ামের ভেতরে মায়োসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে হ্যাপ্লয়েড ( n ) স্পোর উৎপন্ন করে । এখান থেকেই গ্যামিটোফাইটিক দশার শুরু এবং ওই হ্যাপ্লয়েড স্পোরই গ্যামিটোফাইটিক দশার প্রথম কোষ । Gametophyte শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় Gamet = জননকোষ Phyte = উদ্ভিদ / উদ্ভিদদেহ ।
সুতরাং জননকোষ সৃষ্টিকারী দশাকেই গ্যামিটোফাইটিক দশা এবং জননকোষ সৃষ্টিকারী উদ্ভিদদেহকে গ্যামিটোফাইট বলা হয় । স্পোরোফাইট থেকে উৎপন্ন হ্যাপ্লয়েড স্পোর উপযুক্ত পরিবেশ অঙ্কুরিত হয়ে একটি থ্যালাস বা উদ্ভিদদেহ গঠন করে । যে দেহে মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় আরো বহু সংখ্যক হ্যাপ্লয়েড (n) শুক্রাণু ( অ্যান্থেরিডিয়াম ) ও ডিম্বাণু ( আর্কিগোনিয়াম ) উৎপন্ন হয় । পরিণত অবস্থায় ও উপযুক্ত পরিবেশে সেসব হ্যাপ্লয়েড ( n ) শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত (n+n) হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট সৃষ্টি করে । এবং এই জাইগোট কোষই স্পোরোফাইটিক দশার প্রথম কোষ । পরবর্তীতে জাইগোট থেকে মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদদেহ সৃষ্টি হয় । যাকে স্পোরোফাইট বলা হয় ।
১৮. অসমরেণুপ্রসু ( Heterospory ) কাকে বলে ?
একই উদ্ভিদদেহে দুই ধরণের স্পোর উৎপন্ন হওয়ার পদ্ধতিকে অসমরেণুপ্রসু বা হেটেরোস্পোরি বলে । এই দুই ধরণের স্পোরের আকারে পার্থক্য হয় । অর্থাৎ পুং - রেণু ( Microspore ) আকারে ছোট এবং স্ত্রী - রেণু আকারে বড় ( Megaspore ) হয় ।
১৯. প্রোথ্যালাস কাকে বলে ?
স্পোরোফাইট থেকে উৎপন্ন হ্যাপ্লয়েড স্পোর উপযুক্ত পরিবেশে অঙ্কুরিত হয়ে হৃৎপিণ্ডাকার ( Pteris ) পাতার মতো সবুজ বর্ণের যে অঙ্গের সৃষ্টি করে তাকেই প্রোথ্যালাস বলা হয় ।
২০. স্ট্রোবিলাস কাকে বলে ?
স্পোরোফাইটের বায়বীয় শাখার শীর্ষে স্পোর উৎপন্ন হয় । এই স্পোর পুঞ্জিভূত বা একত্রিত হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে তাকে স্ট্রোবিলাস বলে । অন্যভাবে , যখন একটি প্রধান অক্ষের চারপাশে বিশেষ ছোট ছোট পুং ফুল মঞ্জুরি গঠন করে মোচাকৃতি ধারন করে । তখন ঐ সমগ্র পুষ্পকে স্ট্রোবিলাস বলে । এটি সাইকাস উদ্ভিদে দেখা যায় । অর্থাৎ , সাইকাসের মাইক্রোস্পোরোফিল গুচ্ছের মঞ্জুরিকে স্ট্রোবিলাস বলা হয় ।
২১. সারসিনেট ভার্নেশন কী ?
ফার্নের পাতা চিরসবুজ ও পক্ষল যৌগিক । ফার্নের সম্পূর্ণ পাতাকে ফ্রন্ড বলে । কচি অবস্থায় পাতাগুলো কুণ্ডলিত অবস্থায় থাকে । একে সারসিনেট ভার্নেশন বলে ।
২২. ইউস্পোরাঞ্জিয়াম কী ?
যখন কোনো স্পোরাঞ্জিয়াম একাধিক প্রাথমিক কোষ থেকে সৃষ্টি হয় তখন তাকে ইউস্পোরাঞ্জিয়াম বলা হয় । এই ধরণের স্পোরাঞ্জিয়াম আকারে বড় হয় এবং অসংখ্য স্পোর সৃষ্টি করে ।
২৮. লেপ্টোস্পোরাজিয়াম কাকে বলে ?
যখন কোনো স্পোরাঞ্জিয়াম একটিমাত্র প্রাথমিক কোষ থেকে সৃষ্টি হয় তখন তাকে লেপ্টোস্পোরাঞ্জিয়াম বলা হয় । এই ধরণের স্পোরাঞ্জিয়াম আকারে ছোট হয় এবং অল্পসংখ্যক স্পোর সৃষ্টি করে ।
২৩. লিফ গ্যাপ কাকে বলে ?
Pteridophyta- এর উন্নত সাইফোনোস্টিলিতে খাড়াভাবে দীর্ঘায়িত বৃহদাকৃতির কতকগুলো পাতা উৎপন্ন হয় , একে লিফ গ্যাপ বলে ।
২৪. র্যামেন্টা কাকে বলে ?
রাইজোম ও পত্রাক্ষের শল্কপত্রকে র্যামেন্টা বলে ।
২৫. অমসৃণ রাইজয়েড কোথায় পাওয়া যায় ?
Marchantia নামক ব্রায়োফাইটে অমসৃণ রাইজয়েড পাওয়া যায় ।
২৬. সিন্যাঞ্জিয়াম কাকে বলে ?
Psilotum- এর বায়বীয় শাখার ঊর্ধ্বাংশে শল্কাকার পত্রের কক্ষে ত্রিকক্ষ বিশিষ্ট যে স্পোরাঞ্জিয়াম দেখা যায় , তাকে সিন্যাঞ্জিয়াম বলে ।
২৭. বীজ স্বভাব ( Seed Habitat ) কাকে বলে ?
মেগাস্পোরাঞ্জিয়ামের মধ্যে মেগাস্পোরের স্থায়ী অবস্থান ও জাইগোট সৃষ্টি এবং জাইগোট হতে ভ্রূণের সৃষ্টির প্রবণতাকে বীজ স্বভাব বলে ।
২৮. পিট সৃষ্টিকারী একটি মসের নাম লিখ ।
পিট সৃষ্টিকারী একটি মসের নাম Sphangnum
২৯. ট্যাপেটাম কী ?
স্পোরোজেনাস টিস্যুর চারপাশ ঘিরে স্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীরের নিচে যে পুষ্টি সরবরাহকারী টিস্যুর স্তর থাকে তাকে ট্যাপেটাম বলে ।
৩০. একটি ফসিল টেরিডোফাইটের নাম লিখ ।
একটি ফসিল টেরিডোফাইটের নাম- Rhynia
৩১. Sphaerocarpos কে বোতল মস ( Bottle Moss ) বলা হয় কেন ?
Sphaerocarpos কে Bottle Liverwort এবং Ballonwort বলা হয় কারণ, এর থ্যালাস দেখতে বোতল বা বেলনাকৃতির ।
৩২. কাদের ক্লাব মস বলে ?
Lycopodiopsida শ্রেণির মস ( Lycopodium , Selaginella ) সাধারণত ক্লাব মস নামে পরিচিত । কারণ, এদের শাখার আকৃতি লাঠি বা , মুগুরের মতো । যাকে ইংরেজিতে Club বলে ।
৩৩. Royal Fern কাকে বলে ?
Osmunda regalis কে রয়েল ফার্ন বলা হয় । কারণ, এর পরিণত পাতার আকৃতি অনেকটা রাজমুকুটের মতো ।
********************************************************************
মস এবং ফার্ণ (সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর) Part 1 https://www.biologicalworld.in/2023/12/part-1.html
Comments
Post a Comment