প্রতিকূল পরিবেশে শৈবাল টিকে থাকার বিভিন্ন কৌশল

 প্রতিকূল পরিবেশে শৈবাল টিকে থাকার বিভিন্ন কৌশল 

প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকা ও বংশ রক্ষার প্রয়োজনে শৈবাল নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে থাকে । বেঁচে থাকার তাগিদে শৈবালের এসব কৌশলকে পেরিনেশন বা প্রতিকূলজীবিত বলে । নিয়ে শৈবালের প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার কৌশলগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

১. হর্মোসিস্ট : অধিকাংশ নীলাভ সবুজ শৈবালের  প্রজাতিতে বংশ বৃদ্ধির জন্য হর্মোগোনিয়াম তৈরি হয় । অনুকূল পরিবেশে এরা অংকুরিত হয়ে বংশ বিস্তার করে । প্রতিকূল পরিবেশের আগমনে প্রতিটি হর্মোগোনিয়াম এর চারপাশে পুরু প্রাচীর সৃষ্টি করে হর্মোসিস্টে পরিণত হয় । প্রতিকূল পরিবেশ হর্মোসিস্ট টিকে থাকতে সক্ষম । অনুকূল পরিবেশে প্রতিটি হর্মোসিস্ট অংকুরিত এবং বিকশিত হয়ে | নতুন থ্যালাস বা দেহ গঠন করে। উদাহরণ- Nostoc





২. এন্ডোরেনু: অনেক শৈবালে দেহকোষের প্রোটোপ্লাস্ট খণ্ডিত হয়ে একাধিক পাতলা প্রাচীরযুক্ত স্পোর গঠন করে । এসব স্পোরকে এন্ডোরেণু বলে । প্রতিকূল অবস্থায় এন্ডোস্পোরের প্রাচীর পুরু হয়ে টিকে থাকে । অনুকূল পরিবেশে ফিরে এলে এন্ডোরেণু অংকুরিত হয়ে নতুন দেহ গঠন করে । উদাহরণ- Dermocarpa




৩. এক্সোরেণু : থ্যালাসের বাহ্যিক কোষ পরিবর্তিত হয়ে যে স্পোর উৎপন্ন হয় তাকে এক্সোরেণু বলে । কখনো কখনো । | এগুলোর প্রাচীর পুরু হয়ে প্রতিকূল পরিবেশে অতিক্রম করে । | অনুকূল পরিবেশে আগমনে অংকুরিত হয় এবং নতুন থ্যালাস গঠন করে । উদাহরণ- Chamaesiphon.

৪. অ্যাকাইনেট : সাধারণত অঙ্গজ কোষে হলে কোষগুলো আকারে বড় হয় এবং প্রাচীর পুরু করে । পরিবর্তিত এসব অঙ্গজ কোষকে অ্যাকা এগুলো এককভাবে যা শৃঙ্খলভাবে অবস্থান অনুকূল পরিবেশের আগমনে প্রতিটি অ্যাকাইনেট নতুন থ্যালাসের জন্ম দেয় । উদাহরণ- Nostoc .


 ৫. হেটারোসিস্ট : Nostocales , Stigonenn প্রজাতির শৈবালের দেহ কোষ থেকে আকারে ব প্রাচীরযুক্ত হালকা হলদে বর্ণের যে গঠন সৃষ্টি হেটারোসিস্ট বলে । অনুকূল পরিবেশে এরা অংকুরি থ্যালাস গঠন করে ।



৬. শীল্ড : বেশির ভাগ নীলাভ - সবুজ শৈবালের কোষ প্রাচীরের বাইরে , এমনকি গোটা ট্রাইকোম জিলাটিনের শীল্ডে আবদ্ধ থাকে । এরূপ শীল্ড শৈবালকে প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রান্ত করতে সাহায্য করে । উদাহরণ- Scytonema, Spirogyra

৭. পামেলা দশা : কতিপয় সচল শৈবাল প্রতিকূল পরিবেশে মিউসিলেজের আবরণে আবদ্ধ হয়ে নিশ্চল বিশেষ গঠন সৃষ্টি করে । এই অবস্থাকে পামেলা দশা বলে । অনুকূল পরিবেশ ফিরে পেলে এরা স্বাভাবিক সচল জীবন লাভ করে।  উদাহরণ:Chamydomonas . নামক শৈবালে পামেলা দশা দেখা যায়। 



৮. টিউবার : কতিপয় শৈবালে রাইজয়েড খাদ্য সঞ্চয়ের ফলে স্ফীত হয়ে টিউবার গঠন করে । এরা প্রতিকূল পরিবেশে অংকুরিত হয়ে নতুন থ্যালাস গঠন করে ।


৯. বুলবিল : Chara -এর থ্যালাসের পর্ব বা রাইজয়েডের পর্ব হতে খাদ্য সঞ্চয়ের ফলে বাল্বের ন্যায় উপবৃদ্ধি সৃষ্টি হয় । এদেরকে বুলবিল বলা হয় । এরা শৈবালকে প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রমে সাহায্য করে । অনুকূল অবস্থার বুলবিল মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অংকুরিত হয় এবং নতুন থ্যালাস গঠন করে ।





Comments

Popular posts from this blog

কৃষিক্ষেত্রে শৈবালের ভূমিকা